Logo
Logo
×

মতামত

লন্ডননামা

Icon

আলতাফ পারভেজ

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ১৫:৩৮

লন্ডননামা

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকটা না-হওয়া স্পষ্টই জানায় সেটা হওয়ার নিশ্চিত কথা ছিল না। ওটা বাংলাদেশের দিক থেকে একটা কূটনৈতিক আনাড়িপণা ছিল কি না সে বিষয়ে বিতর্ক থাকলেও ড. ইউনূস যে মূলত তারেক রহমানের সঙ্গে বসতে বিলাত গেলেন সেটাই সবার মেনে নেয়া ভালো। সেই অর্থে এটা বাংলাদেশের জন্য একটা ব্যয়বহুল বৈঠক। 

একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিকের (জুলকারনাইন সায়ের) দেওয়া কিছু তথ্য-প্রমাণ দেখাচ্ছে, বিশাল একদল মানুষের এই সফরে বাংলাদেশের জনগণের খরচ প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। তবে কৌতূহল উদ্দীপক দিক হলো, ড, ইউনূসের টিমে তাঁর সহযোগী হিসেবে রাজনৈতিক বিষয়াদিতে দক্ষ উপদেষ্টাদের কেউ নেই—অথচ এই টিম একটা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসতে গিয়েছে। 

দুই.

তারেক রহমান ও টিম-ইউনূসের এই বৈঠকের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভরকেন্দ্র এখন তারেক রহমান। পরিস্থিতির উপর ক্রমে তাঁর একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষণ স্পষ্ট। 

বৈঠকের জন্য তারেক রহমানের সহযোগী বাছাইও সুচিন্তিত ছিল। কখন কোথায় কাকে সঙ্গে নিতে হবে সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

তিন.

ড. ইউনূসের সরকারের গত দশ মাসের প্রশাসনিক, রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক সফলতা এত কম যে, তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক না করে উপায় ছিল না তাঁর, তিনি আর এগোতে সক্ষম ছিলেন না।

চার.

আজকের বৈঠক এও বোঝায়, নির্বাচনের বাইরেও ইউনূস সরকারের কিছু ইচ্ছা ও চাওয়া রয়েছে। শুধু নির্বাচন অনুষ্ঠান করে এই সরকার চলে যেতে চায় না। সেটা হলে এই বৈঠকের খুব বেশি প্রয়োজন হতো না।

পাঁচ.

অনুমান করি, দুই স্তরে হয়েছে আজকের বৈঠক। একটা পুরো টিম আকারে এবং আরেকটা উভয় প্রধানের সহযোগীদের মাধ্যমে। শেষোক্ত অধ্যায়ের কারণে এই বৈঠকের অনেক সমঝোতা ও মতপার্থক্যের কথা আমরা আপাতত জানতে পারবো না। যদিও অনেক অনুমান প্রচারিত হবে।

ছয়.

এই বৈঠকে তারেক রহমান যেসব প্রত্যাশার কথা বলবেন সেই অনুযায়ী ড. ইউনূসকে সামনের দিকে এগোতে হবে। সরকার সেটা করছে কি না তা বিএনপির প্রতিক্রিয়া দেখে আমরা বুঝতে পারবো। এই বৈঠকে তারেক রহমান টিম-ইউনূসের ব্যাক্তিগত, গোষ্ঠীগত বা জাতীয়ভিত্তিক কোন চাওয়া পূরণ করলেন কি না তারও কিছু আলামৎ শিগগির বোঝা যাবে। তার মধ্যে একটা হতে পারে, পার্লামেন্টের একটা কক্ষে সংখ্যানুপাতিক ভোট ব্যবস্থা।

সাত.

এই বৈঠক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বার্তা দিচ্ছে, গণঅভ্যুত্থান আপাতত স্রেফ ক্ষমতা হস্তান্তরে পরিণত হচ্ছে এবং সেটা আরও খারাপ বিকল্পের চেয়ে হয়তো ভালো। গত দশ মাসের প্রশাসনিক কর্মকান্ড বাংলাদেশের জন্য অতিরিক্ত ব্যয়বহুল প্রমাণিত হয়েছে। তার দায় যত কমে মেটানো যায় তত শুভ।

পুনশ্চ

ব্রিটিশরা জানে কখন কোথায় বাজি ধরতে হবে। অর্থনৈতিক বুদ্ধিতে তারা কাঁচা নয়।

Logo

অনুসরণ করুন